মূল অনুষ্ঠানস্থল রমনা বটমূলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে অংশ নিতে শুক্রবার সকাল থেকে বৈশাখী সাজে আসতে শুরু করেন বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষ। সবাইকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তল্লাশির মধ্য দিয়ে প্রবেশ করতে হচ্ছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বের হয়েছে মঙ্গল শোভাযাত্রা, ছবি:সংগৃহীত
পুরোনো হতাশা, গ্লানি আর মলিনতাকে পেছনে ফেলে নতুন উদ্যমে এগিয়ে যাওয়া এবং যুদ্ধের পরিবর্তে শান্তির বার্তা নিয়ে নতুন বছর ১৪৩০ বঙ্গাব্দকে বরণ করতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মঙ্গল শোভাযাত্রা বের হলো আজ৷ যুদ্ধবিগ্রহের বিশ্বে শান্তির বার্তা কামনা করে শোভাযাত্রার এবারের প্রতিপাদ্য ঠিক করা হয়েছে—‘বরিষ ধরা-মাঝে শান্তির বারি।’
আজ শুক্রবার সকাল নয়টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ থেকে মঙ্গল শোভাযাত্রা বের করা হয়৷ শোভাযাত্রাটি শাহবাগ মোড় হয়ে পুনরায় ক্যাম্পাসে গিয়ে শেষ হয়৷
শোভাযাত্রা উপলক্ষে সকাল থেকে চারুকলা অনুষদ এলাকায় জড়ো হন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ৷ শোভাযাত্রার নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী৷ বিভিন্ন বাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্য অবস্থান করেন বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায়৷ শোভাযাত্রা উপলক্ষে অর্ধমাস ধরে দিন-রাত এক করে কাজ করেছেন চারুকলা অনুষদের ২৪তম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা৷ তাঁদের সেই পরিশ্রম আজ পরিণতি পেল শোভাযাত্রার মাধ্যমে।
টিএসসি, শাহবাগ, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানসহ পুরো এলাকায় বর্ষবরণের অনুষ্ঠান চলছে। এই এলাকায় যানবাহনের চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ রাখা হয়েছে।দর্শনার্থীরা হেঁটে চলাচল করছেন।
অনুষ্ঠানস্থলের আশপাশের এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে। র্যাব-পুলিশের টহল চেকপোস্ট ও অবজারভেশন পোস্টের মাধ্যমে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, রাজধানীর কাকরাইল থেকে সড়কে যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে যান চলাচলের জন্য রয়েছে ডাইভারসন ব্যবস্থা। কাকরাইল থেকে মৎস্যভবনে এসে দেখা যায় পুলিশের ব্যারিকেড।
মৎস্যভবন থেকে শাহবাগ হয়ে সম্পূর্ণ সড়কে দর্শনার্থীরা হেঁটে চলাচল করছেন। তবে এদিকে শাহবাগ থেকে বাংলামোটরের দিকের সড়কেও বন্ধ রাখা হয়েছে যানবাহনের চলাচল।
ইউনিফর্মে র্যাব-পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকে গোয়েন্দা পুলিশ সদস্যরা সব অনুষ্ঠানস্থলে নজরদারি করছেন।
সব অনুষ্ঠানস্থলের সামনেই র্যাব-পুলিশের একাধিক টহল টিম থাকতে দেখা গেছে। রমনা লেকে পুলিশ ও র্যাবের বোট টহল চলতে দেখা গেছে। নারীদের ইভটিজিং প্রতিরোধে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিশেষ ব্যবস্থা।
র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বাংলানিউজকে বলেন, রাজধানীসহ সারাদেশে নববর্ষের উদযাপন উপলক্ষে সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে র্যাবের স্ট্রাইকিং রিজার্ভ, মোটরসাইকেল পেট্রোল, বোট পেট্রোল ও সিসিটিভি মনিটরিং রয়েছে। যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় র্যাবের রিজার্ভ ফোর্স মোতায়েন রয়েছে, প্রস্তুত রয়েছে র্যাবের স্পেশাল কমান্ডো টিম। নাশকতার ঘটনা মোকাবিলায় টহল ও সাদা পোশাকে গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত রয়েছে ।
তিনি বলেন, র্যাবের গোয়েন্দা নজরদারি ও সাইবার মনিটরিং বাড়ানোর মাধ্যমে জঙ্গিদের যেকোনো নাশকতার পরিকল্পনা নস্যাৎ করতে র্যাব প্রস্তুত রয়েছে। ভার্চুয়াল জগতে নববর্ষকে কেন্দ্র করে গুজব ঠেকাতে আমাদের সাইবার মনিটরিং অব্যাহত রয়েছে।